আস্তিকের ভূত দেখা আর বিড়ালের মাছ বাছা দুটোই সমান। দুজনেই অবজেক্টের প্রতি
এমন মোহগ্রস্ত হয়ে পড়ে যে বিষয়খানি হাল্কা হয়ে যায়। বুঝলেন না? না বোঝার কিছু
নেই। কয়েকটি উদাহরণ দিই ভূতের মতো সরল হয়ে যাবে বিষয়টা।
** ভূতের গল্প সাধারণত শুনেছেন ঠাকুরদা, ঠাকুরমা কিংবা পাড়ার মোড়ল গোছের
কাকুদের কাছ থেকে। তাই না? তাঁদের আঙুলের দিকে তাকিয়ে দেখেছেন কী? একাধিক
আংটি চকমকিয়ে তো ওঠেই। অথবা তাঁরা খুব ভাল বক্তা। গুছিয়ে রূপকথাকে
আপনার কাছে বাস্তব ঘটনা করে তুলতে তাদের দেখবেন জুরি মেলা ভার। সত্যি কথা
বলতে কী ভূতের অস্তিত্ব যদি থাকে তাদের বানানো গল্পের মধ্যেই জীবিত রয়েছে।
** নতুন কোনও ভূতের উত্পত্তি এখন হয়েছে কিনা জানা নেই। পুরোনো একঘেঁয়েমি
সেই ভূতের নাম আজও সবার মুখে দিব্যি ঘুরছে। শাকচুন্নি, ব্রহ্মদৈত্য, মামদো, গেছো,
পেতনি। জানেন তো এদের অশরীরী ঠিকানা? কেয়ার অফ বেলগাছ, শেওরা গাছ,
তেঁতুল গাছ। তাল গাছও ভূত থাকে। আসলে আগে গ্রামগঞ্জে শৌচাগার বলতে সবাইকে
মাঠেই যেতে হত। রাতের অন্ধকারে এই সুখক্রিয়া কর্মটি সারতে বেলগাছ বা
তালগাছের তলায় বসলে বিপদ তো মাথায় চড়ে বসবেই। তাই না! এইজন্য
গুরুজনদের মানা থাকে এইসব গাছের তলায় সুখক্রিয়া করো না। যাদি এই বারণ না
শোনা হয় তার কারণে তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর মতো আরও একটি ভূত তৈরি করা
হয়। ব্রহ্মদৈত্যর। শেওড়া গাছেও বেশ ভূতের উত্পাত রয়েছে। যত ভূতের গল্প
দেখবেন শেওড়া গাছেই। এটা কেন? ভূত বিশেষজ্ঞদের মতে, শেওড়া গাছ গুল্ম
জাতীয়, মেরুদন্ডও নরম। ঝড়-বাদলের রাতে মাথায় ভেঙে পড়ার ভয়েই শেওড়া
গাছের তলা দিয়ে যাতে বারণ। ওই যদি না শোনেন। তাই শেওড়া গাছে মামদো-
গেছোর মতো কিম্ভূতের উত্পত্তি!
** সাহিত্যে ভূত। বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা করতে গেলে ধর্মসঙ্কটে পড়তে হবে।
রবীন্দ্রনাথের কঙ্কাল, জীবন ও মৃত এইসব অলৌকিক ছোট গল্পে সত্যি কী কোনও ঘটনা